উত্তাল ক্রিকেটবিশ্ব! ১১ জন নয়, বরং ১৩ জন নিয়ে খেলে পাকিস্তানকে হারালো ভারত

 


সম্প্রতি অনুষ্ঠিত ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার এক হাই-ভোল্টেজ ক্রিকেট ম্যাচে আম্পায়ারদের বেশ কিছু বিতর্কিত সিদ্ধান্ত এবং ভারতীয় দলের পক্ষ থেকে আসা কিছু আচরণ ক্রিকেট বিশ্বে নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। পাকিস্তানের অভিযোগ, ম্যাচের প্রথম ইনিংসেই তাদের বিরুদ্ধে তিনটি সুস্পষ্ট ভুল সিদ্ধান্ত প্রদান করা হয়, যা পরোক্ষভাবে হার্দিক পান্ডিয়াদের (ভারত) অনুকূলে যায়।

ক্রিকেট নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর ভূমিকা নিয়ে দীর্ঘদিনের সংশয় আবারও প্রকট হয়েছে। 


অভিযোগকারীদের মতে, আইসিসি (ICC) এবং বিসিসিআই (BCCI) এর মধ্যে বিদ্যমান ঘনিষ্ঠতা বৈশ্বিক টুর্নামেন্টগুলোতে ভারতীয় দলকে অন্যায্য সুবিধা দিচ্ছে। এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলও (ACC) একই ধরনের পক্ষপাতিত্বের অভিযোগে অভিযুক্ত। পর্যবেক্ষকদের ধারণা, এই ম্যাচের ঘটনাপ্রবাহ সেই অভিযোগেরই প্রমাণ। পাকিস্তানি শিবিরের দাবি, তাদের খেলোয়াড়দের কেবল প্রতিপক্ষ দলের ১১ জন নয়, বরং মাঠের আম্পায়ারসহ মোট "১৩ জনের" বিরুদ্ধে লড়াই করতে হয়েছে।


ম্যাচে যেসব বিতর্কিত পরিস্থিতি তৈরি হয়:


ফখর জামানের এলবিডব্লিউ (LBW): ম্যাচের দ্বিতীয় ওভারে ভারতীয় পেসার জাসপ্রিত বুমরাহর ইয়র্কার ডেলিভারিতে ফখর জামানকে এলবিডব্লিউ আউট ঘোষণা করেন শ্রীলঙ্কার আম্পায়ার রুচিরা পাল্লিগুরুগে। পরে রিভিউতে দেখা যায়, বল স্টাম্পে আঘাত হানলেও এর ইম্প্যাক্ট ছিল 'আউটসাইড লেগ', যা নিয়ম অনুযায়ী নট আউট হওয়া উচিত ছিল। এই ভুল সিদ্ধান্ত পাকিস্তানের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল।


সাহেবজাদা ফারহানের আউট সিদ্ধান্ত: ১৩তম ওভারে অক্ষর প্যাটেলের শর্ট লেন্থের ডেলিভারি সাহেবজাদা ফারহানের প্যাডে আঘাত হানলে আম্পায়ার তাকে আউট দেন। কিন্তু রিভিউতে দেখা যায় যে, বলের পিচিং ছিল 'আউটসাইড অফ', ফলে ফারহান নট আউট ঘোষিত হন এবং রক্ষা পান।


সালমান আলী আঘার ক্ষেত্রেও বিতর্ক: এর আগে নবম ওভারে পাকিস্তানের অধিনায়ক সালমান আলী আঘার বিরুদ্ধেও একটি ভুল আউটের সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়েছিল।


আম্পায়ারদের এসব ধারাবাহিক ভুল সিদ্ধান্ত পাকিস্তানি খেলোয়াড়দের মনোবলে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে বলে প্রতীয়মান হয়।

মাঠের বাইরের ঘটনাও কম বিতর্কিত ছিল না। টস পর্বের সময় ভারতীয় অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব পাকিস্তানের অধিনায়ক সালমান আলী আঘার সাথে করমর্দন করতে অস্বীকার করেন। এই আচরণকে অখেলোয়াড়সুলভ এবং ক্রিকেটের স্পিরিট পরিপন্থী বলে তীব্র সমালোচনা করা হয়েছে। এছাড়া, জাতীয় সংগীত পরিবেশনের সময় একটি গুরুতর অসঙ্গতি দেখা যায়। পাকিস্তানের জাতীয় সংগীত শুরুর আগে ভুলক্রমে অন্য একটি গান বাজিয়ে দেওয়া হয়, যা পরে সংশোধন করা হলেও এমন ঘটনা স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্নের জন্ম দেয়।


ক্রিকেট বিশ্বের সবচেয়ে বড় প্রতিদ্বন্দ্বিতার এই ম্যাচে আম্পায়ারদের বিতর্কিত ভূমিকা এবং কিছু খেলোয়াড়ের অগ্রহণযোগ্য আচরণ খেলার মৌলিক নীতি ও সম্মানকে মারাত্মকভাবে ক্ষুণ্ন করেছে। ফুটবল বিশ্বের ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা ম্যাচের মতোই ভারত-পাকিস্তান ক্রিকেট ম্যাচ বিশ্বজুড়ে লাখো ভক্তের আবেগ ও উত্তেজনাকে ধারণ করে, এবং এমন গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা বজায় রাখা অত্যন্ত জরুরি।

No comments

Powered by Blogger.