সুপার ফোরের সমীকরণ মাথায় নিয়ে ‘নাগিন ক্ল্যাসিকো’তে লিটন বাহিনী




গত কয়েক বছরে বাংলাদেশ এবং শ্রীলঙ্কার লড়াইয়ের উত্তাপ বেড়েছে অনেকটাই। ২০১৮ নিদাহাস ট্রফির সেই নাগিন ডান্স থেকে শুরু করে ২০২৩ বিশ্বকাপের টাইমড আউট কাণ্ড – সবকিছুই উত্তাপ, উত্তেজনার মাত্রা বাড়িয়েছে। বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা মানেই যেন এখন রাইভালরি।  



দুই দলের লড়াই নিয়ে সমর্থকদের মধ্যে যত উত্তেজনাই থাকুক মাঠে ক্রিকেটাররা পেশাদার আচরণই করতে চান। তবে বাড়তি উত্তেজনা কিছুটা হলেও তো ছুঁয়ে যায় ক্রিকেটারদের। ম্যাচ পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনে শ্রীলঙ্কান অধিনায়ক চারিথ আসালাঙ্কার কথাতেও পাওয়া গেছে সেই আভাস। 


মাঠের লড়াইয়ে দুই দলেই আছেন তারকা ক্রিকেটার। কুশল মেন্ডিস, কুশল পেরেরা, চারিথ আসালাঙ্কারা বাংলাদেশকে পেলেই বারবার জ্বলে উঠেছেন। জিম্বাবুয়ে সিরিজে আলো ছড়ানো কামিল মিশারাও আছেন দারুণ ছন্দে। বোলিংয়ে মাহিশ থিকশানা, নুয়ান থুসারারাও বাংলাদেশের বিপক্ষে ভালো খেলতে পটু। এশিয়া কাপে লঙ্কানদের প্রথম ম্যাচেই এবার প্রতিপক্ষ বাংলাদেশ। ওপেনিংয়ে পাথুম নিসাঙ্কা এবং কুশল মেন্ডিস লঙ্কানদের বড় শক্তি। সর্বশেষ দ্বিপাক্ষিক সিরিজেও বাংলার বোলারদের নাচিয়ে ছেড়েছেন কুশল মেন্ডিস। এবারও নিশ্চিতভাবেই আলো ছড়াতে চাইবেন তিনি। নিসাঙ্কা এবং মেন্ডিস মিলে ভালো শুরু এনে দিলে টাইগার বোলারদের কপালে শনিই আছে।    


বোলিংয়ে পেস-স্পিন মিলে বেশ শক্তপোক্ত দল লঙ্কানরা। ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গার ফেরাটা বাড়তি শক্তি যোগাবে তাদের। এছাড়া নুয়ান থুসারা, বিনুরা ফার্নান্দোরা বাংলাদেশকে বেশ ভালোভাবেই চেনেন।    


বাংলাদেশও নিশ্চিতভাবেই ছেড়ে কথা বলবে না। পাথুম, মেন্ডিসদের জবাব দিতে বাংলাদেশের ওপেনিং জুটিও প্রস্তুত। পারভেজ হোসেন ইমন এবং তানজিদ হাসান তামিমকে নিয়ে গড়া ওপেনিং জুটি বাংলাদেশের এই দলের সবচেয়ে বড় শক্তির জায়গা। মিডল অর্ডারে তাওহিদ হৃদয় কিছুটা সংগ্রাম করছেন। তবে লঙ্কানদের বিপক্ষে রেকর্ড বেশ ভালো হৃদয়ের। এছাড়া জাকের আলী অনিক, রিশাদ হোসেনরাও অতীতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ভালো করেছেন। সর্বশেষ সিরিজে এক ম্যাচে সুযোগ পেয়ে বল হাতে দারুণ করেছিলেন শেখ মেহেদী হাসানও। ৩ পেসার তাসকিন আহমেদ, মুস্তাফিজুর রহমান, তানজিম হাসান সাকিবরা নিজেদের ছন্দটা ধরে রাখতে পারলে সেয়ানে সেয়ানে টক্কর দেবে বাংলাদেশ এবং শ্রীলঙ্কা।    



অপরিবর্তিত একাদশ নিয়ে মাঠে নামতে পারে বাংলাদেশ। 

আগের ম্যাচের একাদশ থেকে তেমন কোনো পরিবর্তন আনার সম্ভাবনা নেই বাংলাদেশের। চার নম্বরে তাওহিদ হৃদয়কে বসিয়ে সাইফ হাসানকে খেলানোর একটি সম্ভাবনা আছে যদিও। তবে এ যাত্রায় হৃদয় টিকে যাবেন বলেই আশা করা যাচ্ছে। ফিনিশিংয়ে জাকের আলী অনিক, শামীম হোসেন পাটোয়ারীরা বড় আস্থা। বোলিং সবসময়ই বড় শক্তি। সবাই একসাথে জ্বলে উঠলে লঙ্কাবধ খুব বেশি কঠিন হওয়ার কথা নয় টাইগারদের জন্য।    


আবুধাবির উইকেট দুই দলের জন্যই আরামদায়ক হওয়ার কথা। এমন কন্ডিশন, উইকেটে মোটামুটি অভ্যস্ত দুই দলই। বাংলাদেশের জন্য এই ম্যাচে রয়েছে সুপার ফোরের সমীকরণও। লঙ্কানদের হারাতে পারলে সুপার ফোরের পথে অনেকটাই এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ দল। হারলেও সুযোগ আছে তবে পথ কঠিনতর।    


১৩ সেপ্টেম্বর আবুধাবির শেখ জায়েদ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে মাঠে গড়াচ্ছে এশিয়া কাপের ‘বি’ গ্রুপের বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা ম্যাচ। খেলা শুরু হবে বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ৮টায়।    


দুই দলের সম্ভাব্য একাদশ :


শ্রীলঙ্কা : কুশল মেন্ডিস, পাথুম নিসাঙ্কা, কামিল মিশারা, কুশল পেরেরা, চারিথ আসালাঙ্কা (অধিনায়ক), কামিন্দু মেন্ডিস, দাসুন শানাকা, ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা, দুশমন্থ চামিরা, বিনুরা ফার্নান্দো, নুয়ান থুসারা।


বাংলাদেশ :  পারভেজ হোসেন ইমন, তানজিদ হাসান তামিম, লিটন দাস (অধিনায়ক ও উইকেটরক্ষক), তাওহিদ হৃদয়, জাকের আলী অনিক, শামীম হোসেন পাটোয়ারী, শেখ মেহেদী হাসান, রিশাদ হোসেন, তানজিম হাসান সাকিব, তাসকিন আহমেদ, মুস্তাফিজুর রহমান।


No comments

Powered by Blogger.